বৃহস্পতিবার | ২৬শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | রাত ৮:৫৫
শিরোনাম :
Waitrose বাজারে আনলো সম্পূর্ণ রিসাইক্লেবল হ্যান্ডওয়াশ বোতল ঢাকায় গুলশান-বনানী লেকে ইউনিসেফের উদ্যোগে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার কর্মসূচি পুষ্টিগুণ ধরে রাখতে ভোজ্যতেলে চাই মানসম্মত প্যাকেজিং পলিপ্রোপিলিন vs পলিথিন: কোনটি বেশি টেকসই এবং খাদ্যপণ্য প্যাকেজিংয়ে উপযোগী? গাছের বর্জ্য থেকে ১০০% রিসাইক্লযোগ্য প্লাস্টিক তৈরি করলো সুইডিশ কোম্পানি চীনা কোম্পানির বিনিয়োগে ঈশ্বরদী ইপিজেডে স্থাপিত হচ্ছে আধুনিক প্যাকেজিং কারখানা Cambio Roasters বাজারে আনলো রিসাইক্লেবল অ্যালুমিনিয়াম কফি পড বিশ্বের প্রথম কাগজের বোতলে হ্যান্ডওয়াশ: পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবনে নতুন মাত্রা এনেছে SUPA Innovations 8th Agro Bangladesh International Expo 2025- এ Total Business Group এর সফল অংশগ্রহণ ঢাকায় শুরু হতে যাচ্ছে 8th Agro Bangladesh International Expo 2025
ফ্লেক্সোগ্রাফি প্রিন্টিং প্রযুক্তির ইতিহাস ও বর্তমান ব্যবহার

ফ্লেক্সোগ্রাফি প্রিন্টিং প্রযুক্তির ইতিহাস ও বর্তমান ব্যবহার

ফ্লেক্সোগ্রাফি প্রিন্টিং প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত প্রিন্টিং পদ্ধতি। এটি মূলত প্যাকেজিং, লেবেল, পত্রিকা, প্লাস্টিক ফিল্ম, এবং বিভিন্ন বাণিজ্যিক মুদ্রণের জন্য ব্যবহৃত হয়। ১৮৯০ সালে প্রথমবারের মতো এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে এটি আধুনিক শিল্পে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিয়েছে।

ফ্লেক্সোগ্রাফি প্রিন্টিংয়ের ইতিহাস

ফ্লেক্সোগ্রাফির সূচনা হয় ১৮৯০ সালে, যখন এটি “অ্যানিলিন প্রিন্টিং” নামে পরিচিত ছিল। প্রথমদিকে এটি শুধুমাত্র মোটা কাগজ ও প্যাকেজিং সামগ্রীতে ব্যবহৃত হতো। ১৯৫০-এর দশকে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে এর নাম পরিবর্তন করে ফ্লেক্সোগ্রাফি রাখা হয়, এবং এটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই প্রযুক্তির মূল বৈশিষ্ট্য হলো নমনীয় প্লেট ব্যবহার করে দ্রুত এবং দক্ষতার সঙ্গে বড় পরিসরে প্রিন্টিং করা সম্ভব।

কীভাবে কাজ করে ফ্লেক্সোগ্রাফি প্রিন্টিং?

ফ্লেক্সোগ্রাফি প্রিন্টিংয়ে রাবার বা ফটোপলিমার প্লেট ব্যবহার করা হয়, যা ইমেজ বা টেক্সট বহন করে। প্রক্রিয়াটি কয়েকটি ধাপে বিভক্ত:

  1. প্লেট তৈরি: ডিজিটাল বা ফিল্ম প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশেষ প্লেট প্রস্তুত করা হয়।
  2. কালি প্রয়োগ: অ্যানিলক্স রোলারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ কালি প্লেটে স্থানান্তর করা হয়।
  3. প্রেসিং মুদ্রণ: প্লেটটি সাবস্ট্রেট (কাগজ, প্লাস্টিক, ফয়েল ইত্যাদি) এর ওপর চাপ প্রয়োগ করে মুদ্রণ করা হয়।
  4. ড্রাইং প্রসেস: দ্রুত শুকানোর প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মুদ্রিত উপাদানটি প্রস্তুত করা হয়।

ফ্লেক্সোগ্রাফি প্রিন্টিংয়ের বর্তমান ব্যবহার

বর্তমানে ফ্লেক্সোগ্রাফি প্রিন্টিং অনেক শিল্পে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এটি বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়:

  • খাদ্য পানীয় প্যাকেজিং: কাগজ, প্লাস্টিক ও কার্টনের ওপর লেবেল এবং ডিজাইন প্রিন্ট করতে।
  • ওষুধ কসমেটিকস: ওষুধের প্যাকেট ও প্রসাধনী সামগ্রীর লেবেল ছাপাতে।
  • পত্রিকা বিজ্ঞাপন: ম্যাগাজিন, খবরের কাগজ ও বিজ্ঞাপনী ব্যানারে।
  • কমার্স রিটেইল: কাস্টমাইজড প্যাকেজিং ও ব্র্যান্ডিং সামগ্রীতে।

ফ্লেক্সোগ্রাফি বনাম অন্যান্য প্রিন্টিং প্রযুক্তি

ফ্লেক্সোগ্রাফি তুলনামূলকভাবে কম খরচে ও উচ্চ গতিতে বড় পরিসরে প্রিন্টিং করার সুযোগ দেয়। এটি অফসেট প্রিন্টিং এবং গ্র্যাভিউর প্রিন্টিং থেকে অনেক দ্রুত এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক। বিশেষত, যেখানে পুনরাবৃত্তি ভিত্তিক উচ্চ-পরিমাণে মুদ্রণ প্রয়োজন হয়, সেখানে ফ্লেক্সোগ্রাফি সবচেয়ে কার্যকর সমাধান।

ফ্লেক্সোগ্রাফির ভবিষ্যৎ

ফ্লেক্সোগ্রাফি প্রযুক্তির উন্নতি অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে ইকোফ্রেন্ডলি কালি, ডিজিটাল ফ্লেক্সোগ্রাফি, এবং উন্নত প্লেট মেটেরিয়াল এর ব্যবহার এই শিল্পকে আরও এগিয়ে নিচ্ছে। ভবিষ্যতে, অটোমেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) সংযোজনের ফলে ফ্লেক্সোগ্রাফি আরও নির্ভুল ও দক্ষ হয়ে উঠবে বলে আশা করা যায়।

ফ্লেক্সোগ্রাফি প্রিন্টিং শিল্পের অন্যতম প্রধান প্রযুক্তি, যা যুগ যুগ ধরে প্রিন্টিং বিশ্বকে বদলে দিয়েছে। এর দ্রুত উৎপাদন ক্ষমতা, বহুমুখী ব্যবহার এবং আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজনের ফলে এটি আগামী দিনেও প্রিন্টিং শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

শেয়ার করুন





Translate Site »