বাংলাদেশ বর্তমানে প্যাকেজিং শিল্পে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্যের আন্তর্জাতিক মানের প্যাকেজিং এখন দেশেই প্রস্তুত হচ্ছে, যা রপ্তানি বাণিজ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশ ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে মাসে প্রায় ৬৫০০ টন প্যাকেজিং পণ্যের চাহিদা রয়েছে, যার বাজারমূল্য ২০০ কোটি টাকা। দেশে প্রায় একশটি কারখানা এই চাহিদা পূরণ করছে। অন্যদিকে, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য আরও সাড়ে ছয়শো প্যাকেজিং কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
কারখানাগুলোর কর্মীরা বলছেন, প্যাকেজিং প্রক্রিয়া প্রায় সম্পূর্ণভাবে অত্যাধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর। আন্তর্জাতিক মানের প্যাকেজিং সামগ্রী এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে। একটি কর্মী উল্লেখ করেন, “ফুড প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে খাবারের গুণাগুণ ঠিক রেখে প্যাকেজিংয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়।” আরেকজন কর্মী বলেন, “প্রত্যেক খাবারের গুণাগুণ বজায় রাখতে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়।”
এ খাতের উদ্যোক্তারা জানান, দেশের প্যাকেজিংয়ের চাহিদার প্রায় শতভাগই তারা পূরণ করছেন। বাংলাদেশ ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের সভাপতি সাফিউস সামী আলমগীর বলেন, “প্যাকেজিং একটি বড় শিল্প, যেখানে প্রযুক্তিগতভাবে অনেক সাপোর্ট দরকার, যা বাংলাদেশ এখন সম্পূর্ণরূপে প্রদান করতে সক্ষম।”
রপ্তানি বাণিজ্যে তৈরি পোশাকসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের সাথে প্যাকেজিং সামগ্রীও অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। এতে রপ্তানি আয়েও এ খাতের অবদান কম নয়। তবে প্যাকেজিং এখনো আলাদা খাত হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি, ফলে প্রণোদনা বঞ্চিত হচ্ছেন উদ্যোক্তারা, যা মূলত পণ্য রপ্তানিকারকদের পকেটে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এন্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মতি উল্লেখ করেন, “আমরা গার্মেন্টসের মাধ্যমে সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করছি, যা গার্মেন্টস রপ্তানির ১৫ শতাংশ। আমাদের ব্যাকওয়ার্ড না বলে সরাসরি রপ্তানিকারক সেক্টর হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।”
পণ্যের সাথে যুক্ত হয়ে কত ডলারের প্যাকেজিং সামগ্রী রপ্তানি হচ্ছে, তার সুনির্দিষ্ট হিসাব নেই কারো কাছেই। তবে সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এর পরিমাণ চার বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
আইটি সহায়তাঃ টোটাল আইটি সলিউশন